আমাদের প্রত্যেকের চুলের ধরন আলাদা আর নিজের চুল নিয়ে সবারই কম বেশি অভিযোগ আছেই। কারো চুলে রুক্ষতার সমস্যা, কারো চুল পাতলা, কারো চুল কোঁকড়া। ফ্রিজি, ফ্ল্যাট, ড্রাই- আপনার চুল যেমনই হোক না কেন, নিজের চুলকে ভালোবাসুন এবং নিজের চুলের ধরন বুঝে যত্ন নিন।
যদি আপনার চুল হয় স্বাভাবিক এবং ফ্রিজিঃ
স্বাভাবিক চুলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চুলকে ফ্রিজমুক্ত রাখা। স্বাভাবিক চুলের রুক্ষ ও নিষ্প্রভ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। স্বাভাবিক ও ফ্রিজি চুলের জন্য যা অবশ্যই করবেন-
- চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং ফ্রিজমুক্ত রাখতে ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
- চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ও চুল ভাঙ্গা কমাতে চুলের মাঝামাঝি দৈর্ঘ্য থেকে শেষ পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগাবেন।
- তোয়ালে চেপে চুল শুকাবেন। এরপর চুলের ভলিউম বাড়াতে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত হালকা কোনো মুজ লাগাতে পারেন।
- ব্লো ড্রাই করার সময় ড্রাইয়ারের মুখ থাকবে গোড়া থেকে আগার দিকে, তাতে চুলের কিউটিকল ভাঙ্গবেনা।
যা অবশ্যই করবেন না–
হেয়ার স্প্রে থেকে দূরে থাকুন। এগুলো আপনার চুলকে আরও রুক্ষ করবে।
চুলের গোড়ায় কখনোই ময়লা জমতে দেবেন না।
টিপস– চুলের ভলিউম বাড়াতে রাতে শোবার আগে উঁচু করে খোপা করে ঘুমান। সকালে উঠে চুল খুলে দেখুন ম্যাজিক।
যদি আপনার চুল হয় পাতলা এবং ফ্ল্যাটঃ
পাতলা এবং ফ্ল্যাট চুলে ভলিউম আনতে চুলে কোন টেক্সচার্ড, লেয়ার কাট দিন। আর চুল খুব বেশি লম্বা করবেন না। এই ধরনের চুলের অধিকারীদের যা অবশ্যই করণীয়-
- ভলিউম এনহেন্সিং কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
- খুব অল্প পরিমাণে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুলের শেষ প্রান্তে কন্ডিশনার লাগাবেন।
- চুল শুকাবার পর ভলিউমাইজিং স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।
- চুল উল্টে আঁচড়ালে চুলে ভলিউম সৃষ্টি হবে।
- ব্লো ড্রাই করার সময়ও একইভাবে চুল উল্টে ব্লো ড্রাই করুন।
যা অবশ্যই করবেন না– খুব বেশি কন্ডিশনার ও জেল লাগাবেন না, নাহলে আপনার চুল আরও পাতলা দেখাবে।
টিপস– চটজলদি ভলিউম পেতে হাতের কাছে হেয়ার স্প্রে রাখতে পারেন।
যদি আপনার চুল হয় মোটা এবং কোঁকড়াঃ
কোঁকড়া চুল সামলানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, ভালো একটা হেয়ার কাট দেয়া যাতে চুলের ফোলা ভাব কমে এবং চুল সহজে ম্যানেজ করা যায়। কোঁকড়া চুলে হেয়ার কাট সবাই দিতে পারেনা, তাই আপনাকে ভালো একজন হেয়ার এক্সপার্টের কাছে যেতে হবে। আপনার চুল কোঁকড়া হলে নিচের সাধারণ স্টেপ গুলো আপনার জন্য-
- সালফেটমুক্ত, মাইল্ড শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
- লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুলের পুষ্টি ও আর্দ্রতা নিশ্চিত করুন।
- মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করুন।
- চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত কন্ডিশনার লাগাবেন।
- ব্লো ড্রাই করবেন না।
যা অবশ্যই করবেন না– চুলে কোনো ধরনের এলকোহল-বেসড স্প্রে ও হিট দেবেন না।
আরো পড়ুন ঘরেই তৈরি করুন চুলের প্রাকৃতিক রঙ
টিপস– চুলে এলোভেরা, পেন্থানল, ভিটামিন বি, সিল্ক প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার করুন।
পুরো চুল পরিবর্তন না করে বরং আপনার চুলের প্রয়োজন বুঝে যত্ন নিন। তাহলে আপনার চুল যেমনই হোক না কেন, সুন্দর, ঝলমলে চুলে আপনি হয়ে উঠবেন আকর্ষণীয় আর আপনার চুলের ক্ষতিও হবেনা।
লিখেছেনঃ শান্তা সোহেলী ময়না
Leave a Reply