জীবনটাকে গুছিয়ে নিতে চাই আমরা সবাই। কর্মব্যস্ত সময়ে নিজের সংসার আর সবকিছু গুছিয়ে রাখার জন্য পরিবারের সদস্য সংখ্যাও সীমিত রাখতে চাই আমরা। আর সেজন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের কোন বিকল্প নেই। আবার অনেক তরুণ নব-দম্পতিই চান বিয়ের পর তাদের নিজেদের জন্য কিছুটা সময় রাখতে, সন্তান পালনের মত বিরাট দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার আগে নিজেদেরকে তৈরি রাখতে চান অনেকে। সেজন্যও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো জানা জরুরি।
জন্ম নিয়ন্ত্রণ (Birth control) আন্দোলন আঠারো শতকের শেষাংশে ইউরোপে সূচনা হয়। সম্ভবত: ইংল্যান্ডের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ম্যালথাসই (Malthus) এর ভিত্তি রচনা করেন। এ আন্দোলনের আসল উদ্দেশ্য হ’ল বংশ বৃদ্ধি প্রতিরোধ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চহার দেখে মি. ম্যালথাস হিসাব করেন, পৃথিবীতে আবাদযোগ্য জমি ও অর্থনৈতিক উপায়-উপাদান সীমিত। কিন্তু বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা সীমাহীন। ১৭৯৮ সালে মি. ম্যালথাস রচিত An essay on population and as it effects, the future improvment of the society. (জনসংখ্যা ও সমাজের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে এর প্রভাব) নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম তার মতবাদ প্রচার করেন। এরপর ফ্র্যান্সিস প্ল্যাস (Francis Place) ফরাসী দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রতিরোধ করার প্রতি জোর প্রচারণা চালান। আমেরিকার বিখ্যাত ডাক্তার চার্লস নোল্টন (Charles knowlton) ১৮৩৩ সালে এ প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন সূচক উক্তি করেন। তিনি তার রচিত The Fruits of philosophy নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম গর্ভনিরোধের চিকিৎসা শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা এবং এর উপকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
কিন্তু মাঝখানে ১৮৪০ সাল থেকে ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত এ আন্দোলন বন্ধ থাকে। ইংল্যান্ডের অধিবাসীরা এর প্রতি কোনরূপ গুরুত্বারোপ ও সহযোগিতা করতে অস্বীকার জানিয়েছিলেন।
আবার ১৮৭৬ সালে নতুন করে ম্যালথাসীয় আন্দোলন (New Malthusian Movment) নামক নতুন আন্দোলন শুরু হয়। মিসেস এ্যানী বাসন্ত ও চার্লস ব্রাডার ডাঃ নোল্টনের (Fruits of philosophy) গ্রন্থটি ১৮৭৬ সালে ইংল্যান্ডে প্রকাশ করেন। ১৯৭৭ সালে ডাঃ ড্রাইসডেল (Drysdale)-এর সভাপতিত্বে একটি সমিতি গঠিত হয় ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের প্রচার কার্য শুরু হয়ে যায়।
১৮৭৯ সালে মিসেস বাসন্ত-এর রচিত Law of population (জনসংখ্যার আইন) নামক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ১৮৮১ সালে হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও জার্মানীতে এ আন্দোলন ছড়িয়ে যায় এবং ক্রমে ইউরোপ ও আমেরিকার সকল সভ্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানে স্থানে জন্মনিরোধ ক্লিনিক (Birth Control Clinics) খুলে দেয়। [১]
আমাদের নিত্য ব্যবহার্য জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর মাঝে সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় ওষুধ হলো জন্মবিরতকরণ পিল (মেয়েদের জন্য) ও নিরোধক হলো কনডম (ছেলেদের জন্য)। কিন্তু অনেকের কাছেই জন্মনিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতিগুলো পছন্দনীয় নয়। বিভিন্ন জন্মনিয়ন্ত্রক পিলের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন: মাথা ঘোরা, বমি ভাব হওয়া,অল্প অল্প রক্তস্রাব ইত্যাদি। আর কনডম মিলিত হবার সময় ব্যবহার করতে অনাগ্রহী থাকেন অনেক পুরুষ। তাছার কনডম কখনোই ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারে না। সামান্য একটু ফুটো হয়ে গেলেও ঘটে যেতে পারে গর্ভধারণ।
এমন এক সময় ছিল যখন জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য কোন কৃত্রিম পদ্ধতি ছিল না। তবুও মানুষ বিভিন্ন প্রাকৃতিক পন্থায় জন্মনিয়ন্ত্রন করতো। এখন যদিও অনেক অপশন আছে তারপরেও বিশ্বজুড়ে অনেক দম্পতি প্রাকৃতিক উপায়েই জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আজ আপনাদের জানাবো এসব পদ্ধতির বিস্তারিত।
১. ক্যালেন্ডার পদ্ধতি বা সেইফ পিরিয়ড মেথড: সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার আগের নয়দিন এবং মাসিক পরবর্তী চারদিন নিরাপদ সময় হিসেবে বিবেচিত। এ সময়ে দৈহিক মিলন হলেও গর্ভধারণের কোনো ঝুঁকি থাকে না। মাসিক শুরুর আগের নয়দিন এবং মাসিক পরবর্তী চারদিনই সেফ পিরিয়ড বা নিরাপদ সময় হিসেবে গণ্য করা হয়। হিসেব করেও এটি বের করা যায়। ধরুন ২৮ দিন পরপর আপনার নিয়মিত মাসিক হয়। ২৮ থেকে প্রথমে ১৮ এবং পরে ১০ বাদ দিন (২৮-১৮=১০ এবং ২৮-১০=১৮)। অর্থাৎ মাসিক শুরু হওয়ার দিন থেকে নবম দিন পর্যন্ত আপনি নিরাপদ, দশম দিন থেকে ১৮তম দিন পর্যন্ত আপনি ঝুঁকিপূর্ণ এবং আবার ১৯তম দিন থেকে ২৮তম দিন পর্যন্ত আপনি নিরাপদ। অনেকের অনিয়মিত মাসিক হয়। ধরুন কোনো মাসে ৪৫ দিন পর এবং অন্য মাসে ২৬ দিন পর হয়। সে ক্ষেত্রে ৪৫ থেকে ১০ বাদ দিন (৪৫-১০=৩৫) এবং ২৬ থেকে ১৮ বাদ দিন (২৬-১৮=৮) অর্থাৎ মাসিক চক্রের অষ্টম দিন থেকে ৩৫তম দিন পর্যন্ত আপনি ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন। বাকি সময় মোটামুটি নিরাপদ।
২. নারীর দৈহিক তাপমাত্রা মেপে নিরাপদ সময় বের করা: মহিলাদের দৈহিক তাপমাত্রা মেপে নিরাপদ সময় বের করা যায়। এ ক্ষেত্রে ভোরবেলা বিছানা ত্যাগের আগ মুহূর্তে মহিলাদের দৈহিক তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটি কিছু খাওয়ার,পান করার আগেই করতে হবে এবং প্রতিদিন একই সময়ে করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। মাসিক চক্রের প্রথমার্ধে তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। পরে আস্তে আস্তে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ০.২ থেকে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। ডিম্বাণু পরিস্ফুটনের সময় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পায়। এ সময়টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃদ্ধির তিনদিন পর আবার দৈহিক মিলন শুরু করতে পারেন।
৩. জরায়ু মুখের মিউকাস পরীক্ষার মাধ্যমে: জরায়ু মুখের মিউকাস পরীক্ষা করে ঝুঁকিপূর্ণ সময় বের করা যায়। এ পদ্ধতিতে একজন মহিলা আঙুলের সাহায্যে তার জরায়ু মুখের মিউকাস বা নিঃসৃত রস পরীক্ষা করতে পারেন। ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে মিউকাসের পরিমাণ ও ঘনত্ব বাড়তে থাকে। সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছানোর পর আস্তে আস্তে মিউকাসের পরিমাণ ও ঘনত্ব কমে যায়। প্রজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে এমনটা হয়ে থাকে এবং মাসিক শুরু না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করে। মিউকাসের ঘনত্ব ও পরিমাণ সর্বোচ্চ লেভেলে পৌঁছানোর চারদিন পর থেকে দৈহিক সম্পর্ক শুরু করা যেতে পারে।
৪. স্তন্যদানের সময়: সন্তান প্রসবের পর মা যদি বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ান তবে সেই সময় নিঃসৃত হরমোনের প্রভাবে অনেকদিন মাসিক বন্ধ থাকে। তাই সে সময়ও জন্মনিয়ন্ত্রক ছাড়া মিলন তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এই পদ্ধতি ব্যবহারে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয় –
১. আপনার সন্তান প্রসবের পর কোন মাসিক না হয়ে থাকলে।
২. আপনি আপনার সন্তানকে বুকের দুধ এবং শুধু মাত্র বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন কিনা।
৩. আপনার বাচ্চার বয়স ৬ মাসের কম হলে।
এ পদ্ধতির কার্যকারিতা কমে যায় যদি –
১. আপনি শিশুকে বুকের দুধ না খাইয়ে তাকে অন্য খাবার বা পানীয় দেন।
২. আপনার সন্তানের বয়স ছয় মাস হলে।
৫. উইথড্রয়িং মেথড: এটা জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে প্রাচীন পদ্ধতি। এক্ষেত্রে স্বামী মূল ভূমিকা পালন করে থাকেন। এই পদ্ধতিতে শুক্রানু স্খলনের চরম মুহূর্তে স্বামী নিজেকে মিলিত অবস্থা থেকে সরিয়ে ফেলেন যাতে নিঃসৃত শুক্রানু বাইরে পরে। এ বিষয়ে খুব সচেতন থাকা উচিৎ কারণ একফোঁটা শুক্রানু ক্ষরণ থেকেও গর্ভধারণ হতে পারে।
প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতির সুবিধা:
১. এ পদ্ধতিতে হরমোন ট্যাবলেট বা কোনো ডিভাইস ব্যবহার করতে হয় না।
২. সন্তান নিতে ইচ্ছুক দম্পতিরা তাদের নিরাপদ সময় ও ঝুঁকিপূর্ণ সময় সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
৩. এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
৪. বেশিরভাগ মহিলারাই এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন যদি তারা সঠিকভাবে মাসিক চক্রের দিনগুলো গননা করতে পারেন।
৫. স্বামী-স্ত্রীর মতামত ও সম্পৃক্ততার উপরই এর কার্যকারিতা নির্ভর করে। এত দুই জনের মধ্যে বিশ্বাস ও ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাবে।
প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতির অসুবিধা:
১. প্রায় ২৫ ভাগ ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যর্থ।এই পদ্ধতি সঠিক ভাবে অনুসৃত হচ্ছে কিনা তার নিশ্চয়তার জরিপ করে দেখা গেছে যে প্রাকৃতিক জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যবহারকারী প্রতি ৪ জন মহিলার মধ্যে ১ জন গর্ভবতী হয়ে যেতে পারেন।
২. যাদের অনিয়মিত মাসিক হয় তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি অকার্যকর।
৩. যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধে অক্ষম।
৪. স্ত্রী ও স্বামীর সহযোগিতা ছাড়া এই পদ্ধতি অকার্যকর।
৫. আপনি চাপে থাকলে, অসুস্থ হলে, ভ্রমন করলে বা আপনি যদি কোনরকম হরমোন জাতীয় ওষুধ খান, তাহলে গর্ভবতী হওয়ার শারীরিক ইঙ্গিতগুলো পরিবর্তন হয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যর্থ হতে দেখা যায়।
৬. ইমার্জেন্সি গর্ভনিরোধ পিল খেলেও এই সমস্যা হয়। আপনি যদি ইমার্জেন্সি গর্ভনিরোধ পিল খেয়ে থাকেন, তাহলে দুই মাসিক চক্র পার হয়ে যাওয়ার পর পরই প্রাকৃতিক জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়।
পরিশিষ্ট: সাধারনত হিসেবে গন্ডগোল করে ফেলা, অনিরাপদ দিবসেও ঝুঁকি নেয়া, অনিয়মিত মাসিক হওয়া এসব কারনে এই পদ্ধতি ব্যর্থ হতে পারে। তাই সঠিক হিসেব জেনে নেয়ার জন্য ১ম বার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত,যৌন সংক্রমনের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় প্রতিবার শারীরিক মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করা। জন্মনিয়ন্ত্রনের অন্যান্য উপায়গুলো গর্ভধারন রোধ করলেও যৌন সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করে না। [২]
জন্মনিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী পদ্ধতিসমূহ
জীবনকে সুখী ও সুন্দর করার লক্ষ্যে স্বামী-স্ত্রী দুজনে চিন্তা-ভাবনা করে পরিকল্পিত পরিবার গঠন খুবই জরুরি। সন্তান নেয়ার আগে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই চিন্তা করা উচিত- তারা কখন সন্তান নিতে চান? সন্তান নেয়ার মতো প্রয়োজনীয় শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতি তাদের আছে কিনা? সন্তান জন্মের পর তাকে আদর যত্ন ও মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে লালন-পালন করার মতো যথেষ্ট সময় ও আর্থিক সচ্ছলতা তাদের আছে কিনা তাও ভেবে দেখা দরকার। এছাড়া বিয়ের পর পরস্পরকে বোঝার ও জানার জন্য কিছু সময় প্রয়োজন হয়।
দেরিতে সন্তান চাইলে বা কোনো সন্তান না চাইলে পরিবার-পরিকল্পনার পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এর মাঝে কতোগুলো অস্থায়ী অর্থাৎ যতোদিন এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে ততোদিন মহিলাটি গর্ভবতী হবে না। ব্যবহার বন্ধের পর বাচ্চা চাইলে আবার সন্তান ধারণ সম্ভব। খাবার বড়ি, কনডম, ওটঈউ, ইনজেকশন, নরপ্ল্যান্ট এদের মধ্যে অন্যতম।
মহিলাদের জন্য লাইগেশন ও পুরুষদের জন্য ভ্যাসেকটমি স্থায়ী বন্ধ্যাকরণ পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত।
যে সকল মহিলার প্রতিমাসে মাসিক হয় সাধারণত ধরে নেয়া হয় তাদের মাসিক শুরু হবার ১০ থেকে ১৮তম দিনের যেকোনো ১ দিন ডিম্বাশয় থেকে ১টি পরিপক্ক ডিম্বাণু নিঃসরিত হয়। ডিম্বাণুটি নিঃসরণের পর মাত্র ১ দিন সময় থাকে তা নিষিক্ত হবার জন্য। এ কারণে কেউ যদি ঐ সময়ে দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকেন তবে তার সন্তান ধারণের সম্ভাবনা কম থাকে।
অন্যভাবে বলা যায় মাসিক শুরু হবার পর থেকে পুরো সময়টিকে ৩ ভাগে ভাগ করে গড়ে মাঝের ১০ দিন দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকলে তা জন্মনিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ১ম ১০ দিন এবং শেষ ১০ দিন সময় নিরাপদ। তবে অনিয়মিত মাসিকের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।
যে সময়ে মহিলাদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়, খুব খেয়াল করলে দেখা যায় জরায়ুর মুখ থেকে সে সময়ে পরিষ্কার, স্বচ্ছ, টানলে দৈর্ঘ্য বড় হয় এরকম স্রাব নিঃসৃত হয়। আর নিরাপদ সময়ে অস্বচ্ছ, আঠালো, টেনে বাড়ানো যায় না এমন স্রাব নিঃসৃত হয়।
এছাড়া শরীরের তাপমাত্রা এ সময় কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এসব বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রেখে অনেকেই তাদের উর্বর সময় বেছে নিয়ে ঐসময়ে দৈহিক মিলন থেকে বিরত থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
সে সব মায়েরা সন্তান জন্মদানের পর শিশুদের কেবল মাত্র বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ক্ষেত্রে এই বুকের দুধ খাওয়ানোটাই শতকরা ৯৮ ভাগ ক্ষেত্রে জন্মনিয়ন্ত্রণের কাজ করে।
আমাদের দেশে অনেক ধরনের আধুনিক, নিরাপদ ও কার্যকর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রচলিত আছে। দম্পতিরা পদ্ধতিগুলোর সুবিধা, কার্যকারিতা ও ব্যবহার বিধি ভালোভাবে জেনে এদের মধ্য থেকে নিজেদের পছন্দমতো ও উপযুক্ত পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন। [২]
[১] ডিএইচডি
[২] ডা. লুৎফুন্নাহার নিবিড়
Leave a Reply