“তৈলাক্ত ত্বক” – যখনই আমরা এই শব্দটি শুনি তখনই আমরা দাগ, ব্রণ এবং প্যাচেসযুক্ত নোংরা মুখ কল্পনা করতে শুরু করি। যাই হোক, এটি একটি শ্রুতিকথা যে যার ত্বক তৈলাক্ত, সে কখনোই দেখতে ভালো হয় না। আমি এই শ্রুতিকথাটি ভুল প্রমাণ করতে পারব।
আমার নিজের ত্বক তৈলাক্ত এবং এই তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা আমার বয়স যখন ১৩ ছিল তখন থেকেই শুরু হয়। অনেক বছর ধরে আমি ত্বকের নানা রকম সমস্যাতে ভুগি। আমি অনেক অয়েন্টমিন্ট (মেডিসিন জাতীয়), ক্রিম, টনিক ইত্যাদি ব্যবহার করেছি, কিন্তু কোনটাই আমার ত্বকে কাজ করেনি। যার ফলে, আমি আমার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি এবং বাহিরে অথবা কোন পার্টিতে যাওয়া কমিয়ে দিয়ে বেশিরভাগ সময় ঘরেই থাকা শুরু করি।
কিন্তু এখন আমি আমার মুখ নিয়ে খুবই খুশি কারণ আমি ঘরে তৈরি সঠিক প্রতিকার খুজে পেয়েছি যা আমার ত্বককে ভালো দেখাতে সাহায্য করে এবং ত্বক কিছুটা ফর্সা করে।
আরো পড়ুন ঃ মুখের তেলতেলে ভাব কমান ঘরোয়া উপায়ে
আমরা সাধারণত অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ এবং অয়েন্টমিন্ট ব্যবহার করি, কারণ আমাদের মধ্যে এই গুজবটি খুব বেশি প্রচলিত যে এরা ঘরে তৈরি প্রতিকার থেকেও বেশি কার্যকরভাবে কাজ করে। কিন্তু এই কথাটা মোটেও সত্য নয়।
বিশ্বের সবাই ফর্সা, রূপবতী এবং দিপ্তীময়ী হতে চায়। তাই, এখানে ত্বক ফর্সা করার জন্য ঘরে তৈরি কিছু টিপস দেওয়া হল যা আপনাকে ফর্সা এবং সুন্দর দেখাতে সাহায্য করবে। আশা করি আপনারা সকলে টিপসগুলো পছন্দ করবেন। আমি নিশ্চিত এই উপকরণগুলো আপনার ঘরেই সহজে পাওয়া যাবে।
তাই, নিম্নলিখিত টিপসগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত হোনঃ
তৈলাক্ত ত্বক দ্রুত ফর্সা হওয়ার সহজ টিপস
- প্রথমত, দিনে ৭-৮ বার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুবেন। তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী একটি ফেসিয়াল ক্লিনজার কিনুন। সবসময় এমন পণ্য কিনার চেষ্টা করবেন যেগুলোতে প্রাকৃতিক উপাদান থাকে। অরগানিক পণ্য কিনার চেষ্টা করবেন।
- মুখ ধোয়ার সময় পানিতে এক চিমটি লবন মিশিয়ে নিন। কারণ, লবনাক্ত পানি অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়।
- মুখ ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে আস্তে আস্তে চেপে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। কখনো খুব জোরে ঘষে ঘষে মুখ মুছবেন না কারণ, এটি আপনার ত্বক নষ্ট করে দিবে। এছাড়াও, যদি আপনার ব্রণ থাকে তাহলে ব্রণে আচড় পরবে। তাই যতটুকু সম্ভব আপনার ত্বকের প্রতি কোমল থাকুন।
- একটি টোনার কিনুন। প্রতিদিন ক্লিনজিং-টোনিং-ময়েশ্চারাইজিং এই রুটিনটি সবসময় অনুসরন করুন। ক্লিনজার দিয়ে আপানার মুখ ক্লিন করে নিন, এরপর মুখে টোনার লাগান। টোনার সম্পূর্ণভাবে ত্বক ও লোমকূপ পরিষ্কার করে, এবং লোমকূপের আকার ছোট করে। এই উপায়টি ব্রণ হওয়ার সম্ভবনা কমিয়ে দেয়। তাছাড়া, তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী একটি ময়েশ্চারাইজার কিনবেন এবং টোনিং এর পর আপনার ত্বকে ময়েশ্চারাইজারটি লাগাবেন।
- এখন আমি একটি আদর্শ ঘরোয়া প্রতিকারের কথা বলবো। একটি শসা নিন এবং এটিকে জুস করুন। এরপর, এর সাথে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন এবং মুখে লাগান। আপনি আপনার মুখে তাৎক্ষনিক উজ্জ্বলতা দেখতে পাবেন।
- এখানে আরেকটি টিপস দেওয়া হলো, যেটি আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি ঘরে বসে নিজেই একটি ফেইস ওয়াশ বানাতে পারেন।
আরো পড়ুন ঃ ঘামের দূর্গন্ধ দূর করার প্রকৃতিক উপায়
কিভাবে?
- একটি পেঁপে নিন এবং এর পেস্ট করে নিন। এতে কয়েক ফোঁটা মধু যোগ করুন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর, ২-৩ টেবিল চামচ দুধ যোগ করুন। এখন, মিশ্রণটি আপনার মুখে ভালোভাবে লাগান। ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং মুখ তুলো বা তোয়ালে দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিন।
- আমিষভোজীদের জন্য একটি টিপস। আপনি সপ্তাহে ২ বার আপনার মুখে ডিমের সাদা অংশ লাগাতে পারেন। আপনি এটিকে ত্বক ফর্সাকারি মাস্ক হিসেবে লাগাতে পারেন।
- এছাড়াও, আপনি সপ্তাহে দুইবার আখরোটের স্ক্রাব মুখে লাগাতে পারেন। এটি আপনার মুখের লোমকূপে আটকে থাকা ধুলো-ময়লা দূর করে। এছাড়াও এই স্ক্রাব শুষ্ক এবং মৃত চামড়া ধুয়ে পরিষ্কার করে। সুতরাং, এই স্ক্রাবিং এর পর আপনি আরো ফর্সা ত্বক অর্জন করবেন।
- ফর্সা ত্বক পাওয়ার জন্য কাঁচা দুধ খুবই কার্যকরী একটি উপায়। অনেক মায়েরা তাদের বাচ্চাদের জন্য এই ফর্মুলাটি ব্যবহার করেন।
- শেষ কিন্তু সর্বশেষ নয়, বেসন নিন, এক চিমটি হলুদ, জাফরান এবং সামান্য দুধ এতে যোগ করুন। একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি আপনার মুখে লাগান এবং ২০-৩০ মিনিটের জন্য মুখে রেখে দিন তারপর ধুয়ে ফেলুন। আপনি আপনার মুখের রঙে তাৎক্ষণিক একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
আশা করি আপনার পোস্টটি ভালো লেগেছে। আমার দেওয়া তৈলাক্ত ত্বকের এই টিপসগুলো আপনাকে একটি সুন্দর ও ফর্সা ত্বক পেতে অবশ্যই সাহায্য করবে।
তথ্য সূত্রঃ রূপকথন-এ লিখেছেন মোহনা
Leave a Reply