ত্বক নিয়ে বেশী সমস্যায় পড়েন তারা, যাদের ত্বক তৈলাক্ত। মুখে তেলতেলে ভাব যেমন দেয় অস্বস্তি তেমনি দেখতেও ভালোলাগে না। ভালো ফেসওয়াশ, দামী ফেসিয়াল ইত্যাদি যত যাই করুন না কেন, তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি মেলে না। কিছুক্ষণ পরই ফিরে আসে তেল চিটচিটে ত্বক আর আপনার মলিন হওয়া চেহারা।
প্রকৃতিতেই অনেক পণ্য পাওয়া যায় যা দিয়ে আমরা খুব সহজেই প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে পারি। এছাড়াও নিয়মিত ত্বকের কিছু যত্ন নিতে হয় যেগুলো আপনার মুখের তেলতেলে ভাব কমাতে সাহায্য করে। তেমনই কয়েকটি উপায় আজ আমরা আপনাদেরকে জানাবো।
শসার ফেস প্যাক : শসার রস মুখের ত্বকের তেল শুষে নিয়ে ত্বক টানটান করতে সাহায্য করে। শসার রস তৈলাক্ত ভাব দূর করতে খুবই কার্যকর। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে শসার রস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। এতে মুখের তেলতেলে ভাব কমবে।
আরো পড়ুন ঃ স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার প্রাকৃতিক উপায়
গোলাপজল ও লেবুর রস : মুখের তেলভাব কমাতে লেবুর রস দারুন কাজ করে। গোলাপ জল, লেবুর রস সমান পরিমাণে নিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে আধ ঘণ্টা মুখে লাগিয়ে রাখুন। আলতো ভাবে তুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন ধীরে ধীরে। এতে ব্রণ এবং ফুসকুড়ির দাগ উধাও হয়ে যাবে।
টমেটো : তৈলাক্ত ত্বক থকে রেহাই পাবার সবচাইতে সহজ উপায় হচ্ছে টমেটো পিউরির ব্যবহার। টমেটো ত্বকের তৈল গ্রন্থি শুকোতে সাহায্য করে। ফলে স্থায়ীভাবে তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বাসায় টমেটো সেদ্ধ করে ব্লেড করে নিয়ে টমেটো পিউরি বানিয়ে নিন। এরপর এই পিউরি মুখে লাগিয়ে রাখুন ৫-৭ মিনিট। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের তৈলাক্ততা দূর হবে সহজেই।
হালকা ফেইস ওয়াশ: তেল পরিষ্কারক ফেইস ওয়াশ দিয়ে দিনে দুবার মুখ পরিষ্কার করুন। এর মাধ্যমে ত্বকের তেল উৎপাদন কমিয়ে লোমকূপে ময়লা জমা কমানো যায়। ভারী পরিষ্কারক মুখের তেল দূর করার পাশাপাশি মুখের ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুখে আরও তেল উৎপাদন হয়।
মাইসেলার ওয়াটার: এই পানি ত্বকে টোনারের মতো কাজ করে। অপ্রয়োজনীয় সিবাম (ত্বকের তৈলাক্ত তরল) কমাতে সাহায্য করে। তবে ত্বক যেন খুব বেশি শুষ্ক হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ‘মাইসেলার ক্লিঞ্জিং ওয়াটার’ যে কোনো ভালো প্রসাধনী বিক্রেতার কাছ পাওয়া যায়।
ব্লটিং শিট: ব্লটিং শিটে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড থাকে যা তেল কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুয়েকটি করে শিট ব্যবহার করুন। ত্বক পরিচর্যার জন্য ব্লটিং শিট প্রসাধনীর দোকান থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব।
মাস্ক: তেল কমাতে ও ময়লা দূর করতে মাটির মাস্ক সবচেয়ে ভালো কাজ করে। আর্দ্রতা রক্ষা করতে এরসঙ্গে মধু ও শিয়া বাটার যোগ করতে পারেন।
আরো পড়ুন ঃ ব্রণ দূর করার উপায়
খাদ্যাভ্যাস: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। যতটা সম্ভব অতিরিক্ত চিনি ও চর্বি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ফেইশল করা: যদি মাঝে মধ্যেই স্যালনে ফেইশলের জন্য যেয়ে থাকেন তাহলে ‘ভাপ নেওয়া‘ থেকে বিরত থাকুন। কারণ এটা আর্দ্রতা বন্ধ করে ও ত্বক আবার তৈলাক্ত করে ফেলে।
চিকিৎসকের পরামর্শ: ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হলে এবং সাধারণ পদ্ধতিগুলো কাজে না আসলে চর্মরোগ-বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানি আপনার বকের তৈলাক্ততা দূর করতে সাহায্য করে। ডাক্তারদের মতে প্রতি দিন ৮ থেকে দশ গ্লাস পানি পান করা শরীরের জন্য খুব উপকারী। প্রতিদিন সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমান, তাহলে আপনার স্কিনের ক্লান্ত ভাব দুর হয়ে যাবে।
Leave a Reply