সারাবছর রোদে পুড়ে, জলে ভিজে ত্বকের অবস্থা তো কাহিল! এখন থেকে যদি নজর না দেন, তা হলে ক’ দিন পর থেকে কিন্তু হাজার চেষ্টাতেও হাল ফিরবে না ত্বকের। শুধু মেকআপ করে ত্বকের সব দোষত্রুটি ঢেকে দেওয়া যেমন সম্ভব নয়, তেমনি ত্বকের অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে গেলে তার উপর নিখুঁতভাবে মেকআপ বসানোও যথেষ্ট অসুবিধের।
ত্বক পরিচর্যার পর্যাপ্ত সময় যদি আপনার না থাকে, তা হলে আপনার দরকার এমন একটি ম্যাজিক মাস্ক যা দিয়ে ক্লেনজ়িং থেকে শুরু করে ময়েশ্চারাইজ়িং পর্যন্ত ত্বকের যাবতীয় চাহিদা একবারেই মিটে যাবে! আর তার সঙ্গে মিলবে ভিটামিন সহ নানা পুষ্টিকর উপাদানের আশ্বাস। আর এমন এক ম্যাজিক রূপটান তৈরি করতে আপনার দরকার শুধু একবাটি ওটস।
কীভাবে বানাবেন ওটসের রূপটান
এক কাপ শুকনো ওটস ব্লেন্ডারে গুঁড়িয়ে নিন। বালতিতে ঈষদুষ্ণ জল নিয়ে তাতে গুঁড়োটা ঢেলে ভালো করে মিশিয়ে নিন। কয়েক ফোঁটা পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। এবার বালতির জল গায়ে ঢেলে হাত দিয়ে ঘষে ঘষে লাগান। খসখসে ওটসের গুঁড়ো মৃত কোষ তুলে দিয়ে ত্বক এক্সফোলিয়েট করবে। শেষে পরিষ্কার জল ঢেলে স্নান করে নিন।
আরো পড়ুন ঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক ফেসিয়াল স্ক্রাব
ডিপ ক্লেনজ়িংয়ের জন্য
ব্ল্যাকহেড ভোগাচ্ছে? ওটস দিয়ে ডিপ ক্লেনজ়িং করে দেখুন। প্রাকৃতিক উপায়ে ডেড স্কিন তুলে ত্বক কোমল করতে জুড়ি নেই ওটস ক্লেনজ়িংয়ের। এক টেবিলচামচ টক দইয়ের সঙ্গে এক টেবিলচামচ গুঁড়ো ওটস আর কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে মসৃণ পেস্টের মতো তৈরি করুন। মুখে সমানভাবে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণ দূর করতে
আধখানা পাতিলেবুর রসের সঙ্গে একটা ডিমের সাদা অংশ আর এক টেবিলচামচ ওটস মিশিয়ে একটা মসৃণ পেস্ট বানিয়ে নিন। মুখে আর গলায় লাগিয়ে মিনিট পনেরো রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার করলেই ব্রণ থেকে মুক্তি মিলবে।
ওটস খুব মিহি করে গুঁড়ো করে তাতে সামান্য চন্দনগুঁড়ো আর গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে সরাসরি ব্রণর উপরেও লাগাতে পারেন। ব্যথা আর লালচে ফোলাভাব দুটোই কমবে, ব্রণ শুকোবেও তাড়াতাড়ি।
মুখে রোমের আধিক্য দূর করতে
যাঁদের মুখে রোম বেশি তাঁরা জানেন নিয়মিতভাবে থ্রেডিং বা ওয়্যাক্সিং করে রোম তোলা কতটা সমস্যার। তাঁরা ওটস ব্যবহার করে সহজেই এ সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেন। একটা পাকা কলা চটকে দু’ চাচামচ গুঁড়ো ওটসের সঙ্গে মেশান। ১৫ মিনিট মুখে গোল গোল করে মাসাজ করুন, তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্লিচিংয়ের এফেক্ট পেতে ওটস আর কলার মিশ্রণে কয়েক ফোঁটা লেবুর রসও যোগ করতে পারেন। ওটসের রুক্ষতার কারণে কিছু রোম গোড়া থেকে আলগা হয়ে ঝরে যাবে আর কিছু রোমের কালচেভাব অনেকটাই হালকা হয়ে যাবে লেবুর কারণে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ঘরোয়া আরো কিছু উপায়
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নানারকম উপায় মেনে চলি আমরা। অনেক সময় কেমিক্যালযুক্ত ক্রিম বা লোশনও ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু তাতে করে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে প্রয়োজন ঘরোয়া উপায়ে যত্নের। চলুন জেনে নেয়া যাক-
পেঁপে
দিনভর ধুলাবালির অত্যাচারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। দিনশেষে বাড়ি ফিরে কয়েক টুকরা পাকা পেঁপে ত্বকে ঘষে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দূর হবে ত্বকের রোদে পোড়া ও বিবর্ণ ভাব।
ওটমিল
ওটমিল পাউডারের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে ৫ মিনিট রেখে দিন। ওটমিল নরম হয়ে গেলে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এটি উজ্জ্বলতা বাড়াবে ত্বকের।
আরো পড়ুন ঃ প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা করার উপায়
টমেটো
টমেটোর শাঁসের সঙ্গে দই মিশিয়ে তৈরি করুন ফেসপ্যাক। ১০ থেকে ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দইয়ে থাকা ল্যাক্টিক অ্যাসিড ও টমেটোর ব্লিচিং উপাদান ত্বকে ফিরিয়ে আনবে জৌলুস।
আরও খবর: বয়ঃসন্ধির মেয়াদকাল আসলে ১০ থেকে ২৪ বছর
বেসন
বেসনের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে ত্বক ক্রাব করে নিন। মরা চামড়া ও ত্বকের কালচে ভাব দূর হবে।
লেবুর রস
লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। এটি ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করবে।
Leave a Reply