সুন্দর ত্বক চাই আমাদের সবারই। কিন্তু এই সুন্দর ত্বকের অধিকারী হওয়া কি সহজ? অনেকের মতেই ত্বকের নিয়মিত যত্ন নেওয়া অনেক কঠিন। আসলেই কি তাই? আসলে কিন্তু একদম সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললেই দেখবেন আপনার ত্বকে এসে গেছে অন্যরকম সৌন্দর্য। এগুলো এতো সহজ, যে প্রত্যেক নারীই মেনে চলতে পারবেন এসব নিয়ম।
বাড়িয়ে দিন ফল ও সবজি খাওয়ার পরিমাণ
বেশি করে ফল এবং সবজি খাদ্য তালিকায় থাকলে এমনিতেই আপনার ত্বকে চলে আসবে একটা সুস্থ, ঝলমলে লুক। শুধু তাই নয়, রঙ্গিন ফলমূল নিয়মিত খেলে অন্যদের চাইতে নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে আপনার ত্বক। বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি যুক্ত ফল কমিয়ে আনে ত্বকের ভাঁজ ও ত্বকের বয়স কম রাখতে সাহায্য করে।
দিনে দু’বারের বেশি মুখ ধুতে যাবেন না
বেশিরভাগ নারী দিনে ৩-৪ বার ভালো করে মুখ ধুয়ে থাকেন। আসলে কিন্তু দুইবার মুখ ধোয়াটাই আদর্শ। এর বেশি মুখ ধুতে থাকলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল চলে যায়, মুখ হয়ে ওঠে শুষ্ক। এছাড়াও স্ক্রাবার দিয়ে মুখ ধুতে গেলে অনেক সময়ে ত্বকে অতিরিক্ত ঘষা লেগে আরো বেশি ক্ষতি হয়। সাধারণ একটি সুতি কাপড় ব্যবহার করেই মুখ ধুয়ে ফেলা যায় ভালোভাবে।
চোখের আশেপাশে সানস্ক্রিন মাখবেন না
চোখের আশেপাশের ত্বক হয় অনেক বেশি স্পর্শকাতর। এ কারণে এখানে রাসায়নিক ব্যবহার করলে ক্ষতির আশঙ্কা অনেক বেশি। সানস্ক্রিন মাখার বদলে ব্যবহার করতে পারেন ভালো মানের একটি সানগ্লাস।
হালকা পোশাক পরলে সানস্ক্রিন মাখুন
শরীরের যেসব অংশ সূর্যের আলোয় আসে সেখানে কিন্তু সানস্ক্রিন মাখতে ভুলে যাবেন না। অনেক সময়ে দেখা যায় আমরা হালকা রঙের বা পাতলা কাপড়ের পোশাক পরে বের হই। এসব পোশাক সম্পূর্ণভাবে সূর্যের আলোকে ঠেকাতে পারে না, তাই ক্ষতি হয়েই যায়। এ কারণে প্রয়োজনীয় হলো সানস্ক্রিনের ব্যবহার।
চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন
বেশিরভাগ মানুষ কোনো একদিকে কাত হয়ে অথবা উপুড় হয়ে ঘুমাতে ভালোবাসেন। আসলে কিন্তু চিত হয়ে ঘুমানোটা ত্বকের জন্য সবচাইতে উপকারি। কারণ কাত হয়ে বা উপুড় হয়ে ঘুমালে মুখের ত্বকে ভার পড়ে, এতে অকালেই ত্বকে পড়তে পারে ভাঁজ। কোনো কারণে কাত হয়ে ঘুমাতে হলে সিল্কের পরিষ্কার বালিশের কভার ব্যবহার করুন।
ত্বকের ডাক্তার দেখান বছরে একবার
নিয়মিত দাঁতের ডাক্তার দেখানোর কথা বলেন অনেকেই। এভাবে ত্বকের ডাক্তার অর্থাৎ ডারমাটোলজিস্ট দেখানোটাও জরুরি। কারণ তারা খুব সহজেই বুঝে ফেলতে পারেন ত্বকের ক্যান্সারের পূর্বাভাস। এছাড়াও ত্বকের অন্যান্য সমস্যারও সমাধান হয়ে যেতে পারে খুব সহজেই, যদি নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখেন।
ত্বক সুস্থ রাখতে তিন উপায়ে স্ক্রাবিং!
স্ক্রাবিং ত্বককে সুস্থ রাখে। নিয়মিত স্ক্রাব ব্যবহার করলে ত্বকের মরা কোষ দূর হয়। এতে ত্বক নরম ও মসৃণ হয়। তবে স্পর্শকাতর ত্বকে কেমিক্যাল সমৃদ্ধ স্ক্রাব ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ত্বকের ক্ষতিও হতে পারে। এর চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে তৈরি স্ক্রাব ব্যবহার করাই নিরাপদ, কারণ এগুলোতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শঙ্কা থাকে না।
ত্বক সুস্থ ও সতেজ রাখতে চাইলে ঘরোয়া কোনো স্ক্রাব দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করবেন, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়ায়।
পাকা পেঁপে ও ওটমিলের স্ক্রাব
প্রথমে পেঁপে চটকে নিন। এবার তিন টেবিল চামচ পেঁপের সঙ্গে এক টেবিল চামচ টক দই মেশান। এখন ওটমিল গুঁড়া করুন। এর পর এক চা চামচ গুঁড়া ওটমিল পেঁপের মিশ্রণের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার হালকাভাবে পাঁচ মিনিট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

কমলার স্ক্রাব
দুই টেবিল চামচ কমলার খোসার গুঁড়ার সঙ্গে এক টেবিল চামচ ওটসের গুঁড়া ও এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার এই প্যাক দিয়ে মুখে হালকাভাবে পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করুন। ৮ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
কাজুবাদাম ও টমেটোর স্ক্রাব
এক চা চামচ কাজুবাদামের গুঁড়ার সঙ্গে এক চা চামচ চিনি ও এক চা চামচ টমেটোর রস মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আরো পড়ুন প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা করার উপায়
পরামর্শ
- মুখে কখনোই জোরে বা বেশি ঘষে স্ক্রাব দিয়ে ম্যাসাজ করবেন না। এতে আপনার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। আর ব্রণ থাকলে খুবই সাবধানে স্ক্রাব ব্যবহার করবেন।
- চোখের চারপাশে স্ক্রাব ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, এই অংশের ত্বক অনেক পাতলা হয়।
- ঘরোয়া উপায়ে স্ক্রাব তৈরি করার ক্ষেত্রে যেকোনো গুঁড়ার সঙ্গে ফলের রস ব্যবহারে চেষ্টা করুন। এটি ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি উজ্জ্বলও করবে।
- স্ক্রাব যত কম সময় করা যায়, ততই ভালো। পাঁচ মিনিটের বেশি স্ক্রাব দিয়ে মুখে ম্যাসাজ করা ঠিক নয়।
- প্রতিবার স্ক্রাব ব্যবহারের পর ভালো করে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
Leave a Reply