বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেটব্যথা সাধারণ ও সাময়িক, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক রোগের উপসর্গ। পরামর্শ দিয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিপাকতন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ডা. স্বপন চন্দ্র ধর। পেটে ব্যথা হয়নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। খাবারের গোলমালে পেটের ভেতর গুড়গুড় শব্দ, চিনচিনে ব্যথা খুব সাধারণ ঘটনা। পেটব্যথার বেশির ভাগ কারণই সাময়িক ও সাধারণ। ঠিকমতো চিকিৎসা করালে সহজেই ভালো হয়ে যায়। তবে পেটব্যথা মারাত্মক কিছু রোগের লক্ষণ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। পেটব্যথার কারণ
বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পাকস্থলীতে ভাইরাস সংক্রমণ, ঋতুস্রাব, খাদ্যে বিষক্রিয়া, খাবারে অ্যালার্জি, গ্যাস, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, পরিপাকতন্ত্রে আলসার, কটিদেশে প্রদাহজনিত ব্যথা, হার্নিয়া, পিত্তথলিতে পাথর, কিডনিতে পাথর, ইউরিন ইনফেকশন, ক্রনস ডিজিজ, এন্ডোমেট্রিওসিস (মেয়েদের), গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা জিইআরডি, অ্যাপেন্ডিসাইটিস, খাদ্যনালিতে ক্যান্সার, ব্যথানাশক ওষুধ সেবন, লিভারের প্রদাহ, খাদ্যনালিতে অবস্ট্রাকশন, পেটে কৃমি (বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ)।

পেট ব্যাথার প্রাকৃতিক সমাধান
পেটে যখন ব্যাথা শুরু হয় তখন আর সেই যন্ত্রণার শেষ নেই। এ ব্যাথা নানান রকম হতে পারে। সমাধানের জন্য ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করলে সাময়িক বা স্থায়ীভাবে পেটে ব্যাথা নিরাময় সম্ভব। চলুন তাহলে জেনে নেই।
- হজম সমস্যা এবং অরুচিজনিত পেটে ব্যাথায় আদা স্লাইস করে কেটে নিয়ে লেবুর রসে লবন মিশিয়ে তাতে ওই আদা ডুবিয়ে রাখতে হবে খানিকক্ষণ। এরপর আদা রোদে শুকিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে হবে। এতে করে পেট ব্যথা দূর হবে চিরকালের মতো। এছাড়াও পেটে ব্যবাথা কমাতে আদা চা পান করতে পারেন। আদা চা বানাতে, এক কাপ গরম পানির মধ্যে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে ফুটান। এর মধ্যে সামান্য মধু দিন। এরপর এটিকে পান করুন। এ ছাড়া আদা কুচিও চিবাতে পারেন।
- দ্রুত পেটের ব্যথা কমাতে গরম পানির সেঁক খুব কার্যকর। এটি পেটের ব্যথা কমাতে ও পেশি শিথিল করতে কাজ করে। একটি হট ব্যাগে গরম পানি ভরে পাঁচ থেকে ১০ মিনিট রাখুন। প্রয়োজনে পুনরায় পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন। এ ছাড়া গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। এটিও ব্যথা কমাতে কাজ করবে। তবে গরম পানি সেঁক নেওয়ার সময় একটু সতর্ক থাকুন। না হলে পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের জ্বালাপোড়ার ব্যথায় ২০ টি কিশমিশ এক গ্লাস পানিতে সরারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে উঠে কিশমিশগুলো পিষে খালি পেটে খেলে পেট ঠাণ্ডা হবে এবং অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের জ্বালাপোড়ার ব্যাথা থেকে উপশম পাওয়া যাবে।
- ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রিজনিত ব্যাথায় এক কাপ পরিমাণে বেদানার রস প্রতিদিন দুইবার পান করতে হবে। এতে পেটে ব্যাথা তো দূর হবেই একই সঙ্গে ডায়রিয়ার সমস্যাও দূর হবে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার কারণে পেটে ব্যাথায় এক চা চামচ ত্রিফলা কুসুম গরম পানিতে মিলিয়ে প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে পান করতে হবে।এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। এবং পেটে ব্যাথার সমস্যা এমনকি গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।
তথ্য সূত্রঃ মায়া, ইত্তেফাক
Leave a Reply