প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে ঘরের বাইরে যাওয়া হয় প্রায় সকলেরই। এছাড়াও যারা ঘরে থাকেন তাদের নানা কাজে, রান্নাবান্নায়, ঝাড়ামোছাতে ত্বকের উপরে ধুলোর স্তর পড়ে যায়। এর সাথে যোগ হয় মরা কোষ। এইসকল কিছুর আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় আপনার ত্বকের আসল সৌন্দর্য, আসল উজ্জ্বলতা। শুধু তাই নয় ত্বকের নানা সমস্যাও শুরু হয়ে যায় এইসকল ঝামেলার কারণে। কিন্তু খুব সহজেই আপনি এই ধুলোবালি এবং মরাকোষ দূর করে ফিরে পেতে পারেন আপনার ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা। প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবেন এই প্রাকৃতিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন স্ক্রাবগুলো।
চিনি-লেবুর রসের স্ক্রাব
১ চা চামচ চিনি নিন একটি বাটিতে, এতে দিন ১-২ চা চামচ তাজা লেবুর রস। আঙুল দিয়ে একটু মিশিয়ে আধগলা করে নিন চিনি। এবার এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে নিন ভালো করে। আলতো করে ঘষতে থাকুন ভালো করে। ৩-৪ মিনিট ঘষে কুসুম গরম পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। প্রথম ব্যবহারেই নজরে পড়বে উজ্জ্বলতা। আপনি চাইলে পরিমাণ সঠিক রেখে বেশি করে বানিয়ে হাত, পা, গলা ও ঘাড়ের জন্যও ব্যবহার করতে পারেন এই স্ক্রাব। লেবুতে অ্যালার্জি থাকলে শুধু চিনি ও পানি ব্যবহারেও ভালো ফল পাবেন।
আরো পড়ুন ঃ ঘরোয়া উপায়েই মাত্র ১৫ মিনিটে ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পান
চালের গুঁড়ো-দুধের স্ক্রাব
১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো নিন। এতে দিন ১ টেবিল চামচ লিক্যুইড দুধ। একটি নেড়ে পেস্টের মতো তৈরি করে মুখ ও গলার ত্বকে লাগিয়ে নিন। আঙুলের ডগা দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করে নিন। এরপর ২০ মিনিট ত্বকে রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে আবার আলতো ঘষে তুলে ফেলুন। ব্যস, এবার দেখুন ত্বকের উজ্জ্বলতা।
দুধ দিতে না চাইলে পানি দিয়ে মিশিয়েও ভালোই ফল পাবেন।
কফি-অলিভ অয়েলের স্ক্রাব
১ চা চামচ কফি গুঁড়ো করে নিন। এরপর এতে দিন ১ চা চামচ অলিভ অয়েল। এই মিশ্রণটি দিয়ে পুরো ত্বক ভালো করে ম্যাসেজ করে নিন। ৩-৪ মিনিট ম্যাসেজ করার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো করে ত্বক মুছে ফেলবেন। পুরো দেহের ত্বকে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক বৃদ্ধি পাবে, সেই সাথে কমবে ত্বকের অন্যান্য সমস্যা। তৈলাক্ত ত্বক হলে এটি ব্যবহার করবেন না।
ফেসিয়ালের পর ভুলেও যা করবেন না
দারুণ উজ্জ্বল আর সফট গ্লোয়িং স্কিন পাওয়ার জন্য ফেসিয়াল করে অনেকেই। কিন্তু ফেসিয়াল করার পরেও কি আপনি ঠিকমতো সফট আর গ্লোয়িং স্কিন পাননি? ফেসিয়ালকে দোষ দেবেন না। বরং ফেসিয়াল করার পর আমরা এমন কিছু কাজ করি যাতে ফেসিয়ালের এফেক্ট ঠিক ভাবে বোঝা তো যায়ই না, বরং স্কিনে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জেনে নিন ফেসিয়াল করার পর ভুলেও যেসব কাজ করবেন না-
রোদকে পরিহার করুন : ফেসিয়ালের পর ত্বক যেহেতু স্পর্শকাতর হয় এসময় রোদে ঘুরলে সে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে স্কিনের বাইরের অংশের ক্ষতি হয়।
আরো পড়ুন ঃ ত্বক দ্রুত ফর্সা করার জাদুকরী তিন উপায়
পুনরায় ত্বক পরিষ্কার নয় : ফেসিয়াল করলে এমনিতেই ত্বকের উপরের অংশে জমে থাকা ময়লা এবং ক্ষতিকর উপাদান সব ধুয়ে যায়। তাই, ফেসিয়াল করার পর আবার ত্বক পরিষ্কার করতে নেই। এতে ত্বকের কোষগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ওয়াক্সিং নয় : ফেসিয়ালের পর ওয়াক্সিং থেকে দশ হাত দূরে থাকবেন। এমনিতেই ওয়াক্সিং বা থ্রেডিং-এর পরে বেশ ব্যথা করে, আর ফেসিয়ালের পরে করালে ব্যথা তো বাড়বেই, এতে ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
থ্রেডিং নয় : ওয়াক্সিংয়ের মতই ফেসিয়ালের পর ভুরু প্লাক বা থ্রেডিং করবেন না। এই সময় ত্বকের উপরিভাগ নরম থাকার কারণে এমন কাজ করলে ত্বকের প্রদাহ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মেকআপ করবেন না : ফেসিয়াল করানোর নূন্যতম তিনদিন পর বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে বলেন বিউটিশিয়ানরা। কারণ ফেসিয়াল করার সময় আপনার মুখের রোমকূপের মুখ খুলে যায়। আর মেকআপে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ রোমকূপের ছিদ্র দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। আর তার ফলে আপনার শরীরে কিন্তু নানা সমস্যা হতেই পারে। তাই আপনার বিয়েবাড়ি বা পার্টির ৪-৫ দিন আগে ফেসিয়াল করুন, যাতে ওইদিন আপনি নিশ্চিন্তে মেকআপ করতে পারেন।
ফেস মাস্ক : ফেসিয়ালের পর কোন ফেসিয়াল মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। ফেসিয়াল করার কমপক্ষে ৩৬ ঘণ্টা পর ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
মুখে হাত দেবেন না : ফেসিয়ালের পর মুখে কিন্তু একদম হাত দেবেন না। যতই হাত ধুয়ে নিন না কেন, আপনার হাতে জীবাণু তো থাকেই, আর সেগুলোই মুখে গিয়ে কিন্তু ফেসিয়ালের গুণকে একদম নষ্ট করে দিতে পারে।
সূত্রঃ healthdigezt এবং ইন্টারনেট
Leave a Reply