একটি সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে জন্ম দেওয়া একজন নারীর জীবনে বেশ কঠিন বিষয়। গর্ভধারণের পর থেকেই একজন মায়ের ওজন এবং পেট দিন দিন স্বাভাবিক ভাবে বাড়তেই থাকে। আর যদি বাচ্চা ডেলিভারি হয় সিজারিয়ান এর মাধ্যমে তাহলে তার পেটের মেদ কমিয়ে আগের জায়গায় নিয়ে আসতে বেশ সময় লাগে।
বেশির ভাগ নারীই সঠিক সমাধান না জানার কারনে তাঁদের এই পরিবর্তিত অবস্থা নিয়েই তাদের জীবনকে অতিবাহিত করেন। কারণ, অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না যে এই সাময়িক মেদটুকু বা বর্ধিত পেটের অংশটুকু কমানো সম্ভব। সিজারের পরে কিছু নিয়ম কানুন সঠিক ভাবে পালন করতে পারলে আপনার পেট আবার ঠিক আগের মতই স্বাভাবিক হতে পারে।
তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে যেকোনো ধরনের পেটের মেদ কমানো এত সহজ নয় এবং সিজার করার পর সে অবস্থাটা আরো অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, অপারেশনের ফলে তখন স্ট্যান্ডার্ড অ্যাবডমিনাল এক্সারসাইজ বা মেদ কমানোর ব্যায়াম করা যায় না। এজন্য বিকল্প উপায়ে সিজার করার পরও পেটের মেদ কমানো যায়। আসুন জেনে নেই কিভাবে?
১. সিজারের পরে ওজন কমানোর সবথেকে ভালো এবং সহজ উপায় হচ্ছে আপনার বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানো। আপনার বাচ্চাকে অবশ্যই ছয় মাস শুধু বুকের দুধই খাওয়াতে হবে। অনেকে মনে করেন বেশি সময় বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করালে শরীরের সেপ নষ্ট হয়ে যাবে। এটা ঠিক নয় বরং এর সাহায্যে আপনার পেটে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ কমে যাবে।
২. আপনার প্রসবের পর প্রথম ছয়টি মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে প্রেগন্যান্সি হরমোনগুলো দেহে পরিভ্রমণ করে ও শরীরের সব চর্বিগুলো ঢিলেঢালা হতে থাকে। তখন এই চর্বিগুলো একত্রিত হয়ে জমাট বেঁধে গেলে সে সময়ে ওজন কমানোটা বেশ কঠিন হয়ে দাড়ায়। এ জন্য সে সময়ে সাধারণ কিছু ব্যায়াম শুরু করে ফেলতে পারেন, যেমন—হাঁটাহাটি করা।
৩. পেটের মেদ কমাতে চাইলে বেল্টের কোন বিকল্প নেই। আপনাকে খাওয়া-দাওয়া, ঘুম ও ওয়াশরুমে যাওয়া ছাড়া সব সময়েই পেটের বেল্ট পরে থাকতে হবে। যদিও এটা অনেকের কাছে অনেক বিরক্তিকর তবুও আপনি এটি ব্যবহার করলে অবশ্যই ভালো ফল পাবেন।
৪. আপনাকে প্রচুর পানি পান করতে হবে যা শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করবে। আপনি হয়তো শুনে অবাক হবেন যে, প্রচুর পানি পান করলে তা অন্ত্র থেকে অতিরিক্ত মেদ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করতে চেষ্টা করুন। এতে যেমন ক্ষুধা কম লাগবে ঠিক তেমনি পেটও ভরা ভরা থাকবে।
৫. আপনার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালে আপনার শরীরে বাড়তি শক্তির জন্য কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন। এ ছাড়াও বেশি করে ফল এবং সবজি ও প্রোটিনও খেতে পারেন। তবে মিষ্টি, ঘি ও মাখন খাওয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
সিজার অপারেশন করার পরে অন্তত কিছুদিন ভারী ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন। তাই বলে মনে হতে পারে আগের অবস্থা ফিরতে পাবেন না। এই ভেবে হতাশ হবেন না। ধৈর্যে থাকার চেষ্টা করুন। আপনার পেটের মেদ কমবেই।
Leave a Reply