ঝরঝরে ও তরতাজা ত্বকে যে কোন ও সাজই সুন্দর দেখায় । ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখার জন্য নিয়মিত যত্ন ও পরিচর্যার প্রয়জন। ঋতু পরিবর্তনের সময় ত্বক ও চুলের নিতে হয় বিশেষ যত্ন। ঋতুবদলের এই সময়ে ত্বক ও চুল সজিব রাখার সহজ ও উপযোগী পরামর্শ দিয়েছেন অ্যারোমা থেরাপিস্ট শিবানী দে
ফ্রেশ ও সুন্দর থাকার জন্য জরুরী হল ঠিকমত খাওয়াদাওয়া, হেলদি লাইফ স্টাইল, এক্সারসাইজ, পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত যত্ন। স্কিন ফ্রেসনার ও স্কিন টনিক ত্বক ঝরঝরে ও তরতাজা রাখতে সাহায্য করে। স্কিন টনিক বা ফ্রেস নার কেনার সময় মনে রাখতে হবে এটা যেন এতটাই মাইল্ড হয় যে সারাদিনে বেশ কয়েকবার ব্যাবহার করা যায়। হারবাল প্রডাক্ট এদিক দিয়ে ভালো। ফ্রিজে ও রাখা যায়। স্কিন টোন ও রিফ্রেশ করার জন্য একেবারে আদর্শ।
টোনার
গোলাপ জল স্কিন ফ্রেশ নার হিসাবে সবচেয়ে ভালো।
অয়েলি স্কিন
৩/৪ কাপ গোলাপ জলের সাথে ১০ ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পার।
নরমাল স্কিন
৩/৪ কাপ গোলাপ জলের সাথে ১০ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পার।
ড্রাই স্কিন
৩/৪ কাপ গোলাপ জলের সাথে ১/২ চা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পার।
সেনসেটিভ স্কিন
পুদিনা পাতা ও তুলশি পাতা থেঁতো করে জলের সাথে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নামিয়ে ঠান্ডা কর। পাতা ছেঁকে এই জল আলাদা পাত্রে রাখ । এই টোনার ব্যাবহার করতে পার।
ফেশিয়াল স্ক্রাব উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ফেসিয়াল স্ক্রাব ভালো কাজ করে বিশেষ করে অয়েলি স্কিনের জন্য তো স্ক্রাব খুবই ভালো। চালেরগুরা ও আমন্ড গুরার সাথে দৈ বা দুধ মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পার। কমলার খোসা শুকিয়ে গুড়ো করে রাখো। দৈ বা বেসনের সাথে মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পার। পুদিনা পাতা সুকিয়ে গুড়ো করে দৈ এর সাথে ব্যাবহার করতে পার। জলে সামান্য বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি কর। তারপর ত্বকে ১৫ মিনিট মেখে রেখে ধুয়ে ফেল। ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কমতে সাহায্য করবে।
ফেস প্যাক
ড্রাই স্কিন
ডিমের কুসুমের সাথে আধা চা চামচ মধু, মিল্ক পাউডার ১ চামচ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ২০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেল। ১ চা চামচ অরেঞ্জ জুসের সাথে মধু মিশিয়ে সারা ফেস এ দিয়ে ২০ মিনিট রাখ।তারপর ধুয়ে ফেল। ত্বক নরম রাখতে এর কোন জুরি নেই।
অয়েলি স্কিন
ডিমের সাদা অংশের সাথে আধা চা চামচ মধু, ১ চা চামচ লেবুর রস, মুলতানি মাটি মিশিয়ে ঘন পেস্ট করে সারা ফেস এ দিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেল। ১ টি পাকা টোমেটো কুঁচিয়ে ম্যাক্সিতে ব্লেণড করে নিন। ১ চা চামচ লেবুর রস,মুলতানি মাটি মিশিয়ে সারা ফেশ এ দিয়ে ২০ মিনিট রাখ। তারপর ধুয়ে ফেল। এতে করে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমে যাবে।
কমবিনেশন ত্বক:
মুলতানি মাতির সাথে ১ চা চামচ টক দই ভালো করে মিশিয়ে, টার সাথে ১ চা চামচ অরেঞ্জ জুস, ১ চা চামচ কেরট জুস মিশিয়ে সারা ফেস এ দিন ২০ মিনিট রাখুন তারপর ধুয়ে ফেল। কলা, আপেল, পেঁপে, কমলালেবু এক সাথে মিশিয়ে ভালো করে ম্যাশ করে নিন। ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। পেঁপেতে প্রচুর পরিমানে এনজাইম রয়েছে। ডেড সেল পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কলা স্কিন টাইট রাখে। আপেলের পেক্তিন ত্বক পরিস্কার করতে সাহায্য করে। কমলালেবুর ভিটামিন সি ত্বকে অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখে।
চুল
চুল আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চুল সুন্দর তো আপনি সুন্দর। এই কথাটি ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সুন্দর চুলের মানুষের দিকে অন্যরা দ্বিতীয়বার ঘুরে তাকায়। কিন্তু সমস্যা হলো চুলের নানান সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে চুলকে সুন্দর করে তোলা। আবহাওয়ার কারণেই হোক কিংবা যত্নের অভাবেই হোক চুলের নানান সমস্যায় আমরা অনেকেই ভুগে থাকি। সপ্তাহে একদিন হট অয়েল ট্রিটমেন্ট ট্রাই কর। নারকেল তেলের সাথে আমলকি থেঁতো করে , মেথি সামান্য দিয়ে গরম করে ছেকে স্ক্যাল্পে হালকা হাতে ঘষুন। গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে নিংড়ে নাও। তারপর তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখ। সহজে তেল চুলের গোড়ায় ঢুকে যাবে। পরের দিন শ্যামপু করে নাও। নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যামপু বেছে নিতে হবে। শুস্ক, স্বাভাবিক, তৈলাক্ত বা কালারড হেয়ারের জন্যে আলাদা আলাদা শ্যামপু ব্যবহার কর। শ্যামপু করার আগে চুল ভাল করে আঁচরে নাও। চুলের জট তো ছাড়বেই, সঙ্গে ময়লাও পরিস্কার হবে, মরা কোষ ঝরে পড়বে। শ্যামপু করার জন্যে খুব গরম পানি ব্যবহার করবে না। স্ক্যাল্প ও হেয়ার ফলিকলসের জন্যে গরম পানি ক্ষতিকর। ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানি ব্যবহার কর।শ্যামপু করার পর ভাল করে পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেল। চুলে যেন একদম ফেনা না লেগে থাকে। পানি দিয়ে চুল ধোয়ার পর চুল চ্যাটচ্যাট করলে বা চুলে জট থাকলে বা আপনার যদি মনে হয় আর একবার শ্যামপু ব্যবহার করলে ভাল হয় তখন দ্বিতীয়বার শ্যামপু করবে। তবে দ্বিতীয়বার অল্প পরিমাণে শ্যামপু ব্যবহার কর।
শীতে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায় বডি পলিশার
প্রাকৃতিক উপায়ে একটি প্যাক তৈরির করে সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া কমে যাবে
- দশটি জবা ফুল
- একটা পাকা কলা
- আধা কাপ নারকেল তেল
- এক টেবিল চামচ অলিভ ওয়েল
- এক টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস
- দুইটি ডিমের কুসুম
- এক টেবিল চামচ লেবুর রস
- এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার
- এক টেবিল চামচ ঘৃতকুমারী পাতার নির্যাস
সবগুলো উপকরণ এক সাথে নিয়ে পেস্ট তৈরি কর। ভালো ভাবে মেশাবেন। প্রয়োজনে ব্লেন্ড করে নিতে পার। পেস্ট তৈরি হওয়ার পর চুল শ্যামপু করে ধুয়ে নিয়ে চুলের গোড়া থেকে ভালো ভাবে পেস্টটা মাখিয়ে নাও। পেস্ট চুলে যত্ন নিয়ে মেখে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে দাও। তারপর ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন।
Leave a Reply