গরম ভাতে ঘি দিয়ে সাথে বেগুন ভাজা বা গরুর মাংস আহ! কি জিহবে জল চলে এলো । জী হ্যা এটা খেতে যেমন অনেক মজাদার, তেমনি ততটাই উপকার যদি মুখে ঘি লাগিয়ে ম্যাসাজ করা যায়। অনেক গবেষণায় একটা কথাই প্রমানিত হয়েছে যে, ঘি হাত-পায়ে এবং মুখে লাগিয়ে ম্যাসাজ করলে ত্বকের গভীরে কার্যকরী উপাদান এমন মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে ত্বকের সৌন্দর্য যেমন অনেক গুনে বৃদ্ধি পায় ঠিক তেমনি ত্বকের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি সাধন হয় । যার ফলে নানা রকমের ত্বকের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব । বিশেষজ্ঞদের মতে ঘি জাতিও খাবার এবং পানীয়গুলি খেলে কখনও লিভার খারাপ হবে না !
ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে: আপনি কি কখনও খেয়াল করে দেখেছেন সারাদিন অফিসে এসির বাতাস খাওয়ার পর অফিস শেষে আপনার ত্বক কেমন শুষ্ক আর ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে গেছে । শুধু তাই নয়, ত্বকের গভীরে আদ্রতা কমে পানি শূন্য হওয়ার কারণে ত্বকে বলিরেখা প্রকাশ পেতে শুরু করে । ফলে সৌন্দর্য কমে খুব অল্প সময়েই ত্বকে বয়স্ক ভাব এসে যায় । এখন হয়তো মনে প্রশ্ন উঠেছে, এই অবস্থায় কিভাবে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখা সম্ভব? চিন্তার কোন কারণই নেই। আপনি পরিমান মত একটু ঘি আর পানি নিয়ে মুখে লাগিয়ে ভালো ভাবে ম্যাসাজ করুন এভাবে মাত্র ১৫ মিনিট করে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন । এভাবে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে পারলে দেখবেন আপনার ত্বকের হারিয়ে যাওয়া স্কিনের আদ্রতা আবার ফিরে পাবে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে দ্বিগুণ হারে যা নজর কারবে সবার ।
ত্বকের বয়স কমবে: বেশ কিছু দিন আগে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছে যে কর্মক্ষেত্রে বা অতিরিক্ত মানুষিক স্ট্রেস এবং পরিবেশ দূষণের ফলে ত্বকের স্বাস্থ্যের খুব ভয়ানক মাত্রায় ক্ষতি হয়, যা আপনার ২০ থেকে ৩০ বছরের বয়সের ত্বককে ৪০-৪৫ বছরের বয়স্ক মানুষের মত দেখায় । এ ঘটনা কিন্তু কয়েকজন মানুষেরই নয়, প্রায় ৬০-৭০% মানুষই এই সমস্যায় আক্রান্ত হয় । আর নিশ্চয়ই আপনিও চাইবেন না সেই ৬০-৭০% এর ভিতর আপনি থাকুন । তাই আপনাকে নিয়মিত ঘি ম্যাসাজ করতে হবে তবেই মিলবে পতিকার । এজন্য প্রথমে ভালো করে মুখটি ধুয়ে নিন । তারপর পরিমান মত অল্প একটু ঘি নিয়ে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন । আপনি যদি নিয়মিত এমনটি করতে পারেন দেখবেন নিমিষেই সব সমস্যা ঘুচে গিয়েছে । আর বেশি রাত না জেগে অবশ্যই সময় মত ঘুমিয়ে পরবেন ।
ফাটা ঠোঁটের পরিচর্যায় কাজে লাগে: আপনার কি সারা বছরই ঠোঁট ফেটে থাকে? বিভিন্ন ধরনের নামি-দামি কোম্পানির লিফ জেল বা লিফ বাম ব্যবহার করেও কোন ফল পাচ্ছেন না? চিন্তার কোন কারন নেই । সমস্যা আজই দূর হবে । প্রতিদিন রাত্রে ঘুমতে যাওয়ার পূর্বে আঙ্গুলে একটু ঘি নিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পরুন । নিয়মিত এটা করলে আপনার ঠোঁটের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে এবং ঠোঁটও থাকবে তুলার মত নরম । সাথে বোনাস হিসেবে একটা সারপ্রাইজও থাকছে । বলুন তো কি? থাক আমিই বলছি, আপনার ঠোঁটের উপরে কালো ছোপ ছোপ দাগ থাকলে তা কোথায় গিয়ে পালাবে খুজেই পাবেন না । বরং আপনার ঠোঁট পিঙ্ক হয়ে উঠবে যা আপনার ঠোঁটকে আরও আকর্ষণীও করে তুলবে ।
চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে: আপনি কতটা দেখতে সুন্দর তার অনেকটাই নির্ভর করে আপনার মায়াবী চোখ আর ঠোঁটের উপর । তাই ঠোঁটের পাশাপাশি নিয়মিত চোখের পরিচর্যাও করতে হবে । প্রতি রাতে ঘুমতে যাওয়ার পূর্বে আঙ্গুলে একটু ঘি নিয়ে চোখের তলায় লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন । আপনার চোখের ক্লান্তি দূর হয়ে ডার্ক সার্কেলও মিলিয়ে যেতে শুরু করবে । ফলে চোখের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে যা নজর কারবে অনেকের ।
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: অনেকেরই ধারনা যে চুলে ঘি দিলে চুল পরে যায় । তা একেবারেই ভুল। প্রতিদিন নিয়ম করে পরিমাণ মত ঘি নিয়ে তার সঙ্গে একটু অলিভ অয়েল মিশিয়ে তারপর আঙ্গুল দিয়ে চুলের গোড়ায় সুন্দর ভাবে ম্যাসাজ করতে শুরু করুন । নিয়মটি টানা এক সপ্তাহের করলেই বুঝবেন চুল পরে গেল নাকি চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়ে অন্যকে পাগল করল । আসলে ঘিয়ের ভিতরে এত ধরনের পুষ্টি উপাদান আছে যা আপনাকে বিভিন্ন উপায়ে সাহায্য করে থাকবে । আপনার মাথার স্কাল্পে ঘি লাগিয়ে নিন কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন । এরপর সময় হয়ে এলে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল ভাবে মাথা ধুয়ে ফেলুন । সপ্তাহে মাত্র ২-৩ বার এভাবে চুলের পরিচর্যা করলেই বুঝে যাবেন পার্থক্য । আবার চাইলে এভাবেও করতে পারেন, আমলকী বাটা নিয়ে তার সাথে একটু ঘি মিশিয়ে মাথায় ভালো করে চুলে এবং চুলের গোঁড়ায় লাগিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন । সময় হয়ে গেলে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে মাথা ধুয়ে নিন যেন আমলকী গুলো মাথায় লেগে না থাকে। দেখবেন চুল কতটা সিল্কি হয়ে গেছে ।
Leave a Reply