শেষ কবে মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করেছিলেন, মনে আছে? মনে নাই তো? এমনটাই হওয়ার কথা। কিন্তু আপনি কি জানেন, মেকআপ ব্রাশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হয়?
জিহ্বা কামড়ানোর কিছু নেই। অধিকাংশ মানুষই এটা জানে না। আবার অনেকে জানে কিন্তু মেনে চলতে পারে না। খুব কম সংখ্যক মেয়ে আছে, খুবই কম… যারা এটা জানে জানে এবং মেনে চলে।
যাইহোক, আমরা নিয়মিত মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করি না বলে ক্রমশ মেকআপ ব্রাশের উপর জমতে থাকে মেকআপের মস্ত বড় একটা আস্তরণ। এবং কেনার সময় ব্রাশের ফাইবারগুলোর যে রং ছিল সেটা হারিয়ে গিয়ে চারিদিকে শুধু মেকআপের রঙ দেখা যায়। এটা দেখতে তো বেশ নোংরা লাগেই; সাথে আপনার ত্বকের হাইজিনও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই আমাদের মেকআপের ব্রাশ পরিষ্কার রাখাটা অবশ্যই জরুরী।
ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলেন, মেকআপ ব্রাশের তন্তুতে জমে থাকা ফাউন্ডেশন সপ্তাহে অন্তত একবার পরিষ্কার করাই উচিত। তা নাহলে ব্রাশের তন্তুতে জন্মাতে পারে ব্যাকটেরিয়া। এবং ব্যাকটেরিয়া যে ত্বকের জন্য ক্ষতিকর তা নিয়ে কোনও সন্দেহ তো নেয় আমদের। আমার এটা অবশ্যই মাথায় রাখতে প্রয়োজন, ওই ব্রাশগুলো আমাদের চোখের চারপাশেও ব্যবহার হচ্ছে ফলে শুধু ত্বক নয়, নোংরা ব্রাশের জমে থাকা ব্যকাটেরিয়া আমাদের চোখেরও ক্ষতি করছে।
আসলে অনেকে মনে করে, মেকআপ ব্রাশ ঘনঘন পরিষ্কার করলে ব্রাশের ব্রিসল্গুলোর আয়ু কমে যাবে। কিন্তু আদৌতে ঘটে উলটো ঘটনা। ব্রাশ যত পরিষ্কার করবেন, তত ব্রিসলগুলোর আয়ু বাড়তে থাকবে। তবে অবশ্যই সঠিক উপায়ে ব্রাশ পরিষ্কার করতে হবে হয়ত আমার ভয়ের কারণটি ফলে যাবে অর্থাৎ বিস্রল নষ্ট হয়ে যাবে। আসুন তাহলে জেনে নেই মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করার সঠিক নিয়ম-
কয়েকটি ধাপে মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করতে হয়। আমি ধাপগুলো ১, ২… এমন ক্রমিক নম্বরে সাজিয়ে লিখছি।
১। প্রথমে মেকআপ ব্রাশ হালকা গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন। যদি বেসিনে বা বাথরুমের কোলে গরম পানির ধারার মতে ব্রাশগুলো ধুতে পারেন তাহলে খুবই ভালো হয়।
২। এখন বাজারে মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করার সাবান পাওয়া যায়। গরম পানিতে ব্রাশ ধুয়ে নেওয়ার পর হাতের তালুতে সাবানটি অল্প করে নিন।
৩। এরপর মেকআপ ব্রাশের ব্রিসলগুলোর আগা বা ডগাগুলো সাবানে আলতো করে মাখতে থাকুন।
৪। ব্রিসল থেকে মেকআপগুলো একেবারে বেরিয়ে গেলে আবার হালকা গরম পানিতে ব্রাশের ব্রিসলগুলো ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫। এবারে ব্রাশের তন্তুগুলো থেকে ভালো করে পানি ঝেরে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন, মেকআপ ব্রাশের ব্রিসলগুলোর মধ্যে যেন পানি জমে না থাকে। তাই যদি মনে হয়, ব্রিসলগুলোতে কিছু পানি থেকে গেছে তাহলে শুকনা তোয়ালে দিয়ে পানিগুলো ছাড়িয়ে নিন।
৬। এই সময় আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, ব্রাশের তন্তুগুলো যেন এলোমেলো হয়ে না থাকে। তাই মেকআপ ব্রাশগুলো শুকিয়ে গেলে হাতের আঙুল দিয়ে ব্রাশের তন্তুগুলোর আকার ঠিক করে নিতে হবে।
৭। এবারে ব্রাশগুলো উল্টোভাবে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখে দিন। তাহলে ব্রিসলের আকার ভালো থাকবে। তবে সাজান্নোর আগে ভালো করে আরেকবার দেখে নেওয়া ভালো যে ব্রিসলের আকারগুলো ঠিক আছে কিনা, এলোমেলো অবস্থায় ব্রিসল্গুলো শুকিয়ে যায় নি তো। কারণ এলোমেলো অবস্থায় ব্রিসলগুলো শুকিয়ে গেলে এদের আকার ক্ষতিগ্রস্থ তো হবেই; সেই সাথে মেকআপ করতে গিয়ে আপনাকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। তাই পানি ঝরানোর জন্য ভুল করেও তোয়ালের মধ্যে ব্রাশগুলো রেখে দিবেন না। তোয়ালা দিয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়ে সেগুলো খুলে রাখবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
বাসায় যদি মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করার সাবান না থাকে তাহলে কি করবেন? গায়ে দেওয়া সাবান ব্যবহার করবেন? না… মোটেও এমনটা করবেন না। এক্ষেত্রে ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন কিন্তু অন্য কোন ধরণের সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
শ্যাম্পু দিয়ে ব্রিসলগুলো পরিষ্কার করার পর ভালো করে ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। কারণ শ্যাম্পউর ফেনা যেতে দেরী হয়, তা আমাদের সকলের জানা।
ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া সব থেকে কার্যকারী উপায়
আচ্ছা, যদি বাসায় শ্যাম্পুও না থাকলে তাহলে কীভাবে মেকআপ ব্রাশ ধুবেন? ধুবেন না? সামনে সপ্তাহে ধোয়ার জন্য রেখে দিবেন? এমনটাও করবেন না। বাসায় যদি মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করার সাবান বা ভালো মানের শ্যাম্পু না থাকে তাহলে ডিস ওয়াশার লিকুইড শোপও ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু এর সাথে খানিকটা অলিব অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে।
এই পদ্ধতিতে মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার করলে ভালো করে শুকিয়ে অবশ্যই।
Leave a Reply